সনদ আরবী শব্দ। আভিধানিক অর্থ- সূত্র, সমর্থন ইত্যাদি।
পারিভাষিক অর্থ- কারো কথা-কাজ, বা অভিব্যক্তি পরবর্তীদের কাছে পৌঁছুতে মানুষের যে পরম্পরা লাগে, তাকেই সনদ বা সূত্র বলে। যথা- কোন তাবেয়ী বা তাঁর পরবর্তীগণ নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কথা, কাজ, সমর্থন, আখলাক ইত্যাদি সরাসরি দেখেনও নি, শোনেনও নি; বরং তাঁরা তা তাঁদের পূর্বসুরি অর্থাৎ সাহাবীগণের মাধ্যমে পেয়েছেন। এই মাধ্যমটাকেই সনদ বলে।
আরো দেখুন- ইমাম বুখারী রহ.-এর মৃত্যু- ২৫৬ হিজরীতে। তিনি নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে সরাসরি কোনো কিছুই শোনেননি; বরং তিনি কিছু সংখ্যক ব্যক্তির মধ্যস্থতায় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদীসগুলো পেয়েছেন । যথা- ইমাম বুখারী রহ. তাঁর রচিত সহীহুল বুখারীর প্রথম হাদীসটি নবীজি থেকে সরাসরি বর্ণনা করেননি।
কারণ তিনিতো নবীজির যুগে পৃথিবীতেই ছিলেন না। নবীজির ওফাতেরও অনেক পরে তিনি জন্মলাভ করেন। এ জন্য এই হাদীসটি তিনি বীজি থেকে কয়েক জনের সূত্রে লাভ করেছেন।
হাদীসটির মূল বাক্য নিম্নরূপঃ إنما الأعمال بالنيات-
উক্ত হাদীস বর্ণনা করার আগে ইমাম বুখারী রহ. নিজে উল্লেখ করেন-
আমি উক্ত হাদীসটি শুনেছি আব্দুল্লাহ বিন যুবায়ের আল হুমাইদী রহ. (মৃ. ২১৩ হি.) থেকে।
তিনি সুফিয়ান বিন উয়াইনা রহ. (মৃ. ১৯৮ হি.) থেকে।
তিনি ইয়াহইয়া বিন সাঈদ আল আনসারী রহ. (মৃ. ১৪৩ হি.) থেকে।
তিনি আলকামাহ বিন ওয়াক্কাস লাইসী রহ. (মৃ. ১২০ হি.) থেকে।
তিনি সাহাবী ওমর বিন খাত্তাব রাযি. থেকে।
তিনি নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে।
এভাবে কয়েক জনের সূত্রে নবীজি থেকে উক্ত হাদীস ইমাম বুখারী রহ.-এর কাছে পৌছেছে। এটাই সনদ বা সূত্র। এই পরম্পরাকেই সনদ বলা হয়।