হিজরী তৃতীয় শতাব্দীর শেষ দিকে মুহাদ্দিসীনে কেরাম ব্যাপকভাবে হাদীস সংকলন শুরু করার আগ পর্যন্ত বানোয়াটকারীরা মিথ্যা হাদীসের সয়লাব সৃষ্টি করে আল্লাহ তা’আলার দ্বীনের বিরাট ক্ষতি করার আয়োজন করে বসেছিলো। কিন্তু আল্লাহ তা’আলা যেহেতু এই দ্বীনকে কিয়ামত পর্যন্ত অবিকৃত করে রাখবেন, তাই উম্মতের মধ্যে প্রতি যুগেই বিরাট সংখ্যক মুহাক্কীক আলিমকে নিয়োজিত করেছেন সুন্নাতে রাসূল বা আল-হাদীসের সংরক্ষণের জন্য।
সাহাবায়ে কেরাম থেকে শুরু করে হাদীস সংকলন প্রক্রিয়া হিজরী তৃতীয় শতাব্দীর শেষলগ্ন পর্যন্ত নযীরবিহীন সতর্কতা অবলম্বনের মাধ্যমে তাঁরা হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বিকৃতকারীদের হাত থেকে রক্ষা করেন। তাঁরা অক্লান্ত পরিশ্রম-ত্যাগ ও কুরবানীর বিনিময়ে মিথ্যা হাদীসসমূহকে চিহ্ণিত করে সহীহ হাদীসসমূহ আমাদের সামনে দিবালোকের মত স্পষ্ট করে রেখেছেন।
আখেরি নবীর বাণীসমূহকে অবিকৃতভাবে সংরক্ষণের জন্য আল্লাহ তা’আলা এ উম্মতকে যে তাওফীক দিয়েছেন, অন্য কোনো উম্মতের ক্ষেত্রে তা ঘটেনি। মুহাদ্দিসীনে কেরাম যেসব পদক্ষেপের মাধ্যমে হাদীসে রাসূল সংরক্ষণ ও বিকৃতি থেকে সেগুলোকে রক্ষা করেছেন, নিম্নে সেগুলোর প্রধানতম কিছু দিক উল্লেখ করা হলোঃ
হাদীসের সনদ সংরক্ষণ
নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাহাবীগণ একে অপর থেকে হাদীস গ্রহণ করতে এবং তাবেয়ীনরাও সাহাবীদের কাছ থেকে হাদীস গ্রহণ করতে কোনো সন্দেহ করতেন না; কিন্তু যখনই ইসলামে প্রথম ফিতনা সংঘটিত হয়, অর্থাৎ তৃতীয় খলীফা উসমান রাযি. বিদ্রোহীদের হাতে নিহত হন এবং সাহাবী আলী বিন আবি তালিব রাযি.খলীফা হওয়ার পর অপর সাহাবী মুআবিয়া রাযি.-এর সাথে যুদ্ধ সংঘটিত হয় এবং পরবর্তী পর্যায়ে চতুর্থ খলীফা আলী রাযি. খারেজী বিদ্রোহীদের হাতে নিহত হন, তখন থেকেই হাদীস নকল করার প্রবণতা শুরু হয়।
ইসলামের দুশমন এক ইয়াহুদী আব্দুল্লাহ বিন সাবা চরমপন্থি শিয়া আকীদার গোড়াপত্তন করে আলী রাযি. সম্পর্কে বাড়াবাড়ি করতে গিয়ে তাঁর খোদায়ীর মিথ্যা দাবি করতে থাকে। তখন থেকেই সাহাবা ও তাবেয়ীন হাদীস গ্রহণ করার ক্ষেত্রে বাছ-বিচার শুরু করে দেন। নির্ভরযোগ্য রাবীদের নির্ভরযোগ্য সনদ ছাড়া তাঁরা কোনো হাদীস কবুল করতেন না।
সনহ পদ্ধতির মর্ম হচ্ছে- হাদীসটি যিনি রেওয়ায়াত করেছেন, তিনি নির্ভরযোগ্য, আমানতদার, সঠিক ধী-শক্তিসম্পন্ন ও ব্যক্তিগতভাবে পরহেযগার কিনা? তিনি যার থেকে হাদীসটি শুনেছেন, তিনিও এসব যোগ্যতায় উত্তীর্ণ কিনা? এভাবে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পর্যন্ত একে অপর থেকে শোনার ব্যাপারটি নিশ্চিত হওয়া, মাঝখানে কোনো বর্ণনাকারী অনির্ভরযোগ্য না হওয়া বা ছুটে না যাওয়া।
ইমাম মুসলিম প্রখ্যাত তাবেয়ী মুহাদ্দিস ইবনে সীরিন থেকে বর্ণনা করেন-
প্রথমদিকে এ সনদ প্রথার কোনো প্রচলন ছিলো না। কিন্তু যখন ফিতনা সংঘটিত হয়ে গেলো, তখন কেউ হাদীস বর্ণনা করলে তাকে বলা হতো- আগে রাবীর (বর্ণনাকারীর) নাম বলুন। নির্দিষ্ট মানদন্ডে নির্ভরযোগ্য হলে তার হাদীস কবুল করা হবে। অন্যথায় তার হাদীস গ্রহণ করা হবে না।
ফিতনা পরবর্তী যুগে যেসব সাহাবী জীবিত ছিলেন- এ ব্যাপারে তাঁদের সতর্কতা লক্ষণীয়। ইমাম মুসলিম রহ. সহীহ মুসলিমের মুকাদ্দিমা (ভুমিকা) তে বিখ্যাত তাবেয়ী মুজাহিদ রহ. থেকে বর্ণনা করেন,
বাশীর আল আফওয়ী নামে এক লোক এসে ইবনে আব্বাস রাযি.কে হাদীস শোনাতে শুরু করলেন। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন- ………
কিন্তু ইবনে আব্বাস রাযি. তার কোনো হাদীসের প্রতি কর্ণপাত করলেন না এবং এসব হাদীস রেওয়ায়াত করার অনুমতিও দিলেন না। বাশীর বললেন- ইবনে আব্বাস! কি ব্যাপার? আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদীস শোনাচ্ছি; অথচ আপনি শোনার আগ্রহ প্রকাশ করছেন না! ইবনে আব্বাস রাযি. বললেন-
এক সময় ছিলো, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন- ‘কেউ এ কথা বলার সাথে সাথে আমরা চোখ কান খাড়া করে তার প্রতি মনোযোগ দিয়ে শুনতাম’। কিন্তু যখন দেখলাম (ফিতনার পরে) কিছু লোক কোনো তাহকীক ছাড়া হাদীসের নামে যাচ্ছে তাই বলা শুরু করে দিয়েছে, আমরা সতর্ক হয়ে গেছি। নির্ভরযোগ্য সূত্র ছাড়া আমরা হাদীস গ্রহণ করি না।
তাবেয়ী আবুল আলিয়া বলেন-
যখন আমরা কোনো মাধ্যমে শুনতাম, অমুক সাহাবী নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে অমুক হাদীস বর্ণনা করেছেন, এ কথা শোনেই সন্তুষ্ট না থেকে আমরা উটে সাওয়ার হয়ে সরাসরি তার থেকে হাদীস শুনে নিশ্চিত হতাম। এটাই হলো সনদ প্রক্রিয়ার মূল কথা।
প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ইবনুল মুবারক রহ. বলেন-
শরীয়তের বুনিয়াদ হচ্ছে সনদ। সনদ যদি না থাকতো, তাহলে যার যা মনে চায়, তাই রেওয়ায়াত করে চালিয়ে দিতো। তিনি আরো বলেছেন- আমাদের বর্ণনাকৃত সহীহ হাদীসসমূহ এবং বিদআতপন্থী বানোয়াট হাদীসসমূহের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয়ের একমাত্র সূত্র হচ্ছে সনদ।
(বিস্তারিত ব্যাখ্যার জন্য দেখুন- আস-সুন্নাহ ওয়া মাকানাতুহা- মুসতাফা আস- সিবাই)
হাদীসের সত্যতা যাচাই
আগে উল্লেখ করা হয়েছে যে, সাহাবী এবং তাবেঈগণ অন্য কোনো মাধ্যমে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদীস শুনলে তার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য সরাসরি ওই সাহাবী থেকে নিশ্চিত হয়ে যেতেন, যিনি স্বয়ং নবীজি থেকে হাদীস শুনেছেন। এ ধারা পরবর্তীতে সকল মুহাদ্দিসীনদের মাঝে অব্যাহত থেকেছে। এমনকি একটি মাত্র বা কয়েকটি হাদীস সরাসরি সূত্র থেকে শুনার জন্য এক শহর থেকে আরেক শহরে, এক দেশ থেকে আরেক দেশে তাঁরা সফর করেছেন।
হাদীস বর্ণনাকারীদের সম্পর্কে অনুসন্ধান চালানো
হাদীস বর্ণনাকারীরা সত্যবাদী ছিলেন, না কখনো মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন- এ ব্যাপারে মুহাদ্দিসীনে কেরাম ব্যাপক অনুসন্ধান চালিয়েছেন। এটা ছিলো এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া- যার মাধ্যমে হাদীস সহীহ, দূর্বল এবং বানোয়াট হওয়ার যথেষ্ট তথ্য যোগাড় করা সম্ভব হয়েছে।
মুহাদ্দিসীনে কেরাম রাবীদের (বর্ণনাকারীদের) ব্যক্তিগত জীবনের খোজ-খবর নিয়েছেন, জীবনী অধ্যয়ন করেছেন, তাদের ইতিহাস সংগ্রহ করেছেন। তাদের প্রকাশ্য ও একান্ত ব্যক্তিগত অনেক বিষয় খতিয়ে দেখেছেন। এ সবই করেছেন হাদীসে রাসূলের স্বার্থে। এতে কেউ অসন্তুষ্ট হলেও তাঁরা পরওয়া করেননি। কোনো রাবীর মধ্যে কোনো দূর্বলতা পরিলক্ষিত হলে নির্দ্বিধায় তা প্রকাশ করে দিয়েছেন। সনদের দূর্বলতার কারণে তাদের হাদীসসমূহ বর্জন করেছেন এবং লোকদেরকেও তাদের সম্পর্কে সতর্ক করেছেন।
একজন প্রখ্যাত হাদীস বিশারদ ইয়াহইয়া বিন সাইদ আল-কাত্তান রহ.কে একবার বলা হলো-
সমস্ত রবীকে আপনি অনির্ভরযোগ্য বলে দিয়ে তাদের হাদীসসমূহ বর্জন করলেন, তারা যদি কিয়ামতের দিন আপনার বিরুদ্ধে আল্লাহ তা’আলার দরবারে নালিশ করে বসে, তা হলে আপনার কি দশা হবে? তিনি জবাব দিলেন,
এরা সবাই যদি আমার বিরুদ্ধে বাদী হয়ে যায়, তা আমার জন্য অনেক ভালো এ অবস্থার চেয়ে যে, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ দায়ের করে বসেন যে, কেনো তুমি জানা সত্ত্বেও আমার হাদীসকে মিথ্যা থেকে রক্ষা করোনি?
(আল কিফায়া ফি ইলমির রেওয়ায়াহ-খতীব আল বাগদাদী)
হাদীস বিশারদগণ এ বিষয়ে এতো অতন্দ্র প্রহরীর মতো কাজ করেছেন, এমনকি নিজের পিতার মধ্যেও কোনো দূর্বলতা থাকলে হাদীসে রাসূলের স্বার্থে সেখানেও কোনো আপোষ করতেন না। প্রখ্যাত মুহাদ্দিস যায়েদ বিন আবী আনিছাহ তার ভাই থেকে হাদীস গ্রহণ সম্পর্কে সতর্ক করে লোকদের বলেন- খবরদার! আমার ভাই থেকে হাদীস গ্রহণ করো না। (সহীহ মুসলিম; শারহু নাওয়ায়ী)
আরেকজন প্রখ্যাত মুহাদ্দিস আলী বিন আল-মাদীনীকে প্রশ্ন করা হলো- তাঁর পিতা থেকে হাদীস গ্রহণ করা যেতে পারে কিনা? তিনি বললেন-
এ প্রশ্নটা অন্য কাউকে করো। কিন্তু প্রশ্নকারী তাঁকেই পুনরায় প্রশ্ন করে উত্তরের অপেক্ষায় থাকলেন। ইবনুল মাদীনী কিছুক্ষণ মাথা নিচু করে চুপ করে থাকলেন। তারপর মাথা উঁচু করে বললেন-
হাদীস গ্রহণের জন্য সনদ হচ্ছে দ্বীনের বুনিয়াদ, আমার পিতা এ বিষয়ে দূর্বল।
(আল-ইলান বিত তাওবীখঃ পৃ-৬৬)
হাদীস বিশাদরগণের হাদীসের দরসের সাপ্তাহিক রুটিনে বর্ণনাকারীদের সম্পর্কে আলোচনা করার জন্য একটা নির্দিষ্ট দিন থাকতো। কোন কোন বর্ণনাকারী নির্ভরযোগ্য আর কোন কোন বর্ণনাকারী অনির্ভরযোগ্য- এ বিষয়ে দরস দেওয়া হতো।
আবু যায়েদ আল-আনসারী বলেন-
একবার বৃষ্টি-বাদলের দিনে আমি প্রখ্যাত হাদীস বিশারদ শো’বা রহ.-এর দরসে হাজির হলাম হাদীস শুনতে। তিনি বললেন- আজতো হাদীস বয়ান করা হবে না। আজকের রুটিন হলো গীবত করা। চলো মিথ্যাবাদীদের গীবত করি।
এখানে ভুল বোঝাবুঝির কোনো অবকাশ নেই যে, মুহাদ্দিস শো’বা রহ. পরনিন্দার মতো কবীরা গোনাহ করার জন্য তার শিক্ষার্থীদের আহবান করছেন। এখানে এ ধরণের মানসিকতার কোনোই অবকাশ নেই; বরং উদ্দেশ্য হচ্ছে মিথ্যাবাদী বর্ণনাকারীদের চিহ্ণিত করা।
এ বিষয়ে উম্মাহর আলিমগণ একমত যে, হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্বার্থে এ কাজ গীবতের পর্যায়ে পড়ে না; বরং এর বর্ণনা জরুরী দ্বীনি বিষয়।
আব্দুর রহমান বিন আল-মাহদী বর্ণনা করেন, আমি প্রখ্যাত মুহাদ্দিস শো’বা, ইবনুল মুবারক এবং মালিক বিন আনাস রহ.কে জিজ্ঞাসা করলাম- এমন ব্যক্তি সম্পর্কে কি বলা যায়, যে মিথ্যা হাদীস বর্ণনার ব্যাপারে অভিযুক্ত? তারা সবাই বললেন- “তার অবস্থা প্রকাশ করে দাও, এটাই হচ্ছে দ্বীন।”
আরেকবার আমি সুফিয়ান সাাওরী, শো’বা, মালেক এবং ইবনে ওয়াইনাকে জিজ্ঞাসা করলাম-
হাদীস বর্ণনার ক্ষেত্রে মজবুত নয় এমন ব্যক্তি সম্পর্কে কেউ আমাকে জিজ্ঞাসা করলে কী জওয়াব দিবো? সবাই একই জবাব দিলেন- “বলে দাও, সে মজবুত বা নির্ভরযোগ্য নন”।
এছাড়া মুহাদ্দিসীনে কেরাম নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদীসকে মিথ্যবাদী ও অনির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারীদের অনিষ্ঠ থেকে রক্ষা করার জন্য নিম্নোক্ত শ্রেণীর বর্ণনাকারীদেরকে চিহ্ণিত করেছেন এবং তাদেরকে বর্জন করেছেন। তাদের কাছ থেকে তাঁরা কানো হাদীস বর্ণনা করেননি।
১. কখনো যদি প্রমাণিত হয় যে, কোনো বর্ণনাকারী একটি মাত্র হাদীসও মিথ্যা বর্ণনা করে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নামে চালিয়ে দিয়েছে, তা হলে তার বর্ণনাকৃত সকল হাদীসকে মুহাদ্দিসীনে কেরাম বর্জন করেছেন।
২. কোনো বর্ণনাকারী যদি সাধারণ কথাবার্তায় কখনো মিথ্য কথা বলে থাকে, তার বর্ণনাকৃত হাদীসও মুহাদ্দিসীনে কেরাম গ্রহণ করেননি। ইমাম মালেক রহ. বলেছেন- চার ব্যক্তি থেকে ইলম (হাদীস) গ্রহণ করা যাবে না;
এক. যে ব্যক্তি আহাম্মক হিসেবে পরিচিত, যদিও ব্যক্তিগতভাবে সে পরহেযগার হয়।
দুই. যে ব্যক্তি সাধারণ কাজ-কারবারে মিথ্যা কথা বলে, যদিও সে মিথ্যা হাদীস রচনা করে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নামে চালিয়ে দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত নয়।
তিন. প্রবৃত্তির চাহিদা মিটাতে যে ব্যক্তি মানুষকে সেদিকে ডাকে।
চার. এমন বুযর্গ ব্যক্তি- যিনি আমলে ভালো, কিন্তু যা রেওয়ায়াত করেন, সে সম্পর্কে অবগত নন।
৩. বিদ’আতকারীগণ, বিশেষ করে ওইসব বিদ’আত- যা মানুষকে কুফরির পর্যায়ে নিয়ে যায়।
৪. যিন্দীক, ফাসিক এবং ওইসব গাফেল ব্যক্তি- যারা তাদের বর্ণনাকৃত হাদীসের বক্তব্য বুঝতে অপারগ। এমন প্রত্যেক ব্যক্তি যে হাদীস সংরক্ষরণে (চাই মুখস্ত করে হোক বা লিখিত আকারে হোক) আমলে ও চরিত্রে এবং মর্ম বুঝতে দুর্বল ও অপারগ, তার হাদীস গ্রহণ করা হবে না।
এছাড়াও নিম্নে লিখিত বর্ণনাকারীদের থেকেও মুহাদ্দিসীনে কেরাম হাদীস গ্রহণ করেননি।
১. যার নির্ভরযোগ্য ও অনির্ভরযোগ্য হওয়ার ব্যাপারে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে।
২. যে বর্ণনাকারী বেশি ভুল করতেন এবং নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারীদের হাদীসের বিপরিত হাদীস বর্ণনা করেছেন।
৩. ওই ব্যক্তি- যার নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদীস ভুলে যাবার অভ্যাস বেশি ছিলো।
৪. জীবনের শেষ বয়ষে যিনি উল্টাপাল্টা করে ফেলেছেন।
৫. যার স্বরণশক্তি খুবই দুর্বল ছিলো।
৬. যে বর্ণনাকারী নির্ভরযোগ্য ও অনির্ভরযোগ্য সকলের কাছ থেকেই হাদীস গ্রহণ করতেন।